رَجَبٌ شَهرٌ عَظِیمٌ یُضاعِفُ اللهُ فیهِ الحَسَناتِ ویَمْحُو فیهِ السَّیِّئاتِ.
অর্থাৎ রজব মহিমান্বিত মাস; আল্লাহ এ মাসের সওয়াবকে বর্ধিত এবং গুনাহকে হ্রাস করেন।
রজব মাসের ফজিলত ও শ্রেষ্ঠত্বের কোন অন্ত নেই। আল্লাহ এ মাসের ভাল কাজের সওয়াবকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দেন এবং মন্দ কাজের শাস্তিকে হ্রাস করেন। এ সম্পর্কে একটি তাৎপর্যপূর্ণ হাদীস ইমাম মুসা কাজীম (আ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে। উক্ত হাদীসে ইমাম (আ.) বলেন,
رَجَبٌ شَهرٌ عَظِیمٌ یُضاعِفُ اللهُ فیهِ الحَسَناتِ ویَمْحُو فیهِ السَّیِّئاتِ.
অর্থাৎ রজব মহিমান্বিত মাস; আল্লাহ এ মাসের সওয়াবকে বর্ধিত এবং গুনাহকে হ্রাস করেন।' আমরা যদি এ হাদীসের মর্মার্থকে বিবেচনা করি তাহলে বুঝতে পারব যে, আমরা কোন গুরুত্বপূর্ণ মাসকে অতিবাহিত করছি।
রজব মাসের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে শাবিস্তান প্রতিবেদক বিশিষ্ট ইসলামী গবেষক হযরত আয়াতুল্লাহ ফারহীর সাথে আলোচনায় মিলিত হয়। এখানে তা সারাংশ আকারে পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুল ধরছি-
প্রশ্ন: রজব মাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এ মাস মু'মিনের অন্তরে আশা ও উৎসাহের সৃষ্টি করে। এ মাসের ইবাদত-বন্দেগী এবং দোয়ার মাধ্যমে বান্দারা শয়তানের বন্দিদশা থেকে নিজেকে মুক্ত করে আল্লাহর রহমত ও বরকতের মাস রমজানে প্রবেশের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। কিভাবে আমরা এক্ষেত্রে সঠিক ও যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি?
উত্তর: বস্তুত: রজব মাস হচ্ছে রমজান মাসের প্রস্তুতিকাল। যদি কেউ রমজান মাসের পরিপূর্ণ ফজিলত ও বরকতকে অনুধাবন করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই রজব মাস থেকে সে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। হাদীসে কুদসিতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন;
"جعلت هذا الشهر حبلاً بینی و بین عبادی فمن اعتصم به وصل إلیّ
অর্থাৎ রজব মাস হচ্ছে মজবুত রশি; যে কেউ উক্ত রশিকে শক্তভাবে আকড়ে ধরবে, সে আমার নিকট পৌছাতে পারবে।' এটা থেকে বুঝা যায় রজব মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অসীম ও অনন্ত। কেননা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা এ মাসকে মজবুত রশির সাথে তুলনা করেছেন। যে রশির মাধ্যমে বান্দারা আল্লাহর নিকট পৌছাতে পারে। তবে এ রশিকে আকড়ে ধরতে হলে আমাদেরকে অবস্যই আত্মশুদ্ধি ও আত্ম সংশোধনের পথ বেছে নিতে হবে। ইসলামে ঘোষিত হালাল ও হারামকে যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। শুধুমাত্র ওয়াজিব ও ফরজ আমল করলেই যথেষ্ট নয়; বরং মুস্তাহাব আমলসমূহের প্রতিও মনোনিবেশ করতে হবে।
সুতরাং রজব মাসকে কোন অবস্থাতেই হাত ছাড়া করা উচিত হবে না। কিংবা অবহেলা ও উদাসীনতার মধ্য দিয়ে এ মাসের ফজিলতপূর্ণ দিনগুলিও অতিবাহিত করা আদৌ সমীচীন নয়। কেউ কেউ হয়তো এমন ধারণা করতে পারে যে, রমজান মাস তো এখনও অনেক দূরে। আমরা রমজান মাস আসার কিছু দিন পূর্বে নিজেকে প্রস্তুত করে নিব। কিন্তু কোন বিবেকবান ও জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি কখনও এমন ধারণা করতে পারে না। হয়তো এমনও হতে পারে রমজান মাস আসার আগেই কেউ এ পৃথিবী ত্যাগ করে চলে গেল। এখানে রজব মাসকে রমজান মাসের প্রবেশমুখ বলা হয়েছে এ অর্থে যে, আত্মিকভাবে রমজান মাসে প্রবেশ করা; না শারিরিকভাবে। এমনও হতে পারে যে, কেউ শারিরিকভাবে রমজান মাসে প্রবেশ করেছে; কিন্তু আত্মিক ও মানসিকভাবে রমজান মাসের জন্য প্রস্তুত হতে পারি নি।