IQNA

ভারতের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ

আমার জীবনের সবথেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে কুরআন শিক্ষা অর্জন করা/ অন্ধত্ব কোন প্রতিবন্ধকতা নয়

4:27 - April 27, 2017
1
সংবাদ: 2602967
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ক্বারি ও হাফেজ 'মুহাম্মাদ কাশেফ' তার জীবনের সবথেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটিকে কুরআন শিক্ষা অর্জন হিসেবে মনে করেন। তিনি বিশ্বাস করেন অন্ধত্ব কোন প্রতিবন্ধকতা নয় এবং মানুষ নিজেই তার বিবেককে নিজ লক্ষ্যের দিকে হেদায়েত করে।
আমার জীবনের সবথেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে কুরআন শিক্ষা অর্জন করা/ অন্ধত্ব কোন প্রতিবন্ধকতা নয়
বার্তা সংস্থা ইকনা: ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে অনুষ্ঠিত ৩৪তম আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ভারতের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ক্বারি ও হাফেজ 'মুহাম্মাদ কাশেফ' হেফজ বিভাগে অংশগ্রহণ করেছেন।
কুরআন বিষয়ক বার্তা সংস্থা ইকনা'র সাথে ভারতীয় ক্বারি ও হাফেজ মুহাম্মাদ কাশেফের সাক্ষাৎকারটি নীচে তুলে ধরা হল:
আপনার বয়স কত?
২৬ বছর।
আপনি ভারতের কোন শহরে জীবন যাপন করেন?
আমি দিল্লিতে জীবন যাপন করি।
কত বছর থেকে কুরআন শিখতে শুরু করেছেন?
৭ বছর থেক কুরআন শিক্ষা অর্জন করছি এবং আমার জীবনের সবথেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে কুরআন শিক্ষা অর্জন করা।
কেন এমন মনে করেন?
কারণ, যদি কুরআন না শিখতাম তাহলে এখন নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করতাম না। কুরআন শিক্ষা অর্জনে যে আনন্দ রয়েছে তা অন্য কোন শিক্ষায় আমি অনুভব করি না। এছাড়াও একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জন্য সম্পূর্ণ কুরআন হেফজ করা একটি সৌভাগ্যের বিষয়।
কীভাবে এবং কত সময়ে মধ্যে কুরআন হেফজ করেছেন?
আমি ৩ বছরে সম্পূর্ণ কুরআন হেফজ করতে সক্ষম হয়েছি। ক্যাসেটে বিভিন্ন ক্বারির কুরআন তিলাওয়াত শুনে কুরআন মুখস্থ করেছি। প্রথম দিকে বেশ কঠিন মনে হয়েছিল। তবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা এবং অনুশীলনের মাধ্যমে আমি সফল হয়েছি। আমি কখনোই নিরুৎসাহিত ও হতাশ হয়নি। আশাপূর্ণ হৃদয় নিয়ে আমি আমার পথ অব্যাহত দিয়েছি।
কেন ব্রেইল বর্ণমালা ব্যবহার করেননি?
ভারতে ব্রেইল বর্ণমালা সংগ্রহ করা একটি কঠিন বিষয়। অপর দিক থেকে অনুভব করেছি যে, আমি শ্রবণে মাধ্যমে ভালোভাবে কুরআন শিখতে পারব। অডিও ফাইলে কুরআন শেখার জন্য আমি আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক "ওলী মুহাম্মাদ"কে ধন্যবাদ জানায়।
আপনি কোন কোন দেশে কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন?
এর পূর্বে আমি তুরস্ক ও ইরানের আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি এবং এটি আমার আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতার তৃতীয় অংশগ্রহণ। ইরানে আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় পুনরায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।
আপনার দেশের কুরআনিক কার্যক্রমের ব্যাপারে কিছু বলেন?
ভারতে কিছু এনজিওর পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে কুরআন প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আমার দেশের মুসলমানেরাও কুরআন শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন এবং কুরআন শিক্ষা অর্জনের প্রতি তাদের আগ্রহ রয়েছে।
আপনি কি অন্ধত্বকে সীমাবদ্ধতা মনে করেন?
না, কখনই এমন মনে করি না।
কেন?
এটা প্রতিটি ব্যক্তির মানসিকতা উপর নির্ভর করে। আমার মতে অন্ধত্ব কোন সীমাবদ্ধতা নয়। মানুষ নিজেই তার বিবেককে নিজ লক্ষ্যের দিকে হেদায়েত করে।
আপনি কি পড়া লেখা শিখেছেন?
না, আমি পূর্বে বলেছি শোনার মাধ্যমে আমি কুরআন শিক্ষা অর্জন করেছি এবং শুধুমাত্র শ্রবণ করেই সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করেছি।
আপনি ইরানের কুরআন প্রতিযোগিতা কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
অনেক ভালো।
এ ব্যাপারে একটু বর্ণনা করতে পারেন?
দৃষ্ট প্রতিবন্ধীদের জন্য এমন পরিবেশ এবং সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছে এটা আসলেই অনেক প্রশংসনীয়। এরফলে ইসলামী বিশ্বে সহানুভূতি ও সংহতি সৃষ্টি হয়েছে এবং এটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের প্রতিভা বিকাশের জন্য একটি উত্তম সুযোগ। এর মাধ্যমে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা প্রমাণ করত পারবে তারা সমাজের অন্যান্য ব্যক্তি তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
ইসলামি বিশ্বকে আপনি কি বার্তা জানাবেন?
ইসলামি বিশ্বের জন্য আমার বার্তা হচ্ছে "ঐক্য এবং সহানুভূতি"। ঐক্য সংগঠন এবং সকল বিভেদ ও বৈষম্য দুর করার মাধ্যমে ইসলামি বিশ্ব তার সঠিক পথে হারকাত করতে পারবে। মুসলমানদের মধ্যে প্রধান অক্ষ হচ্ছে পবিত্র কুরআন। কুরআনতে আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে সকল কুলশীতা দূর করা সম্ভব। মুসলমানেরা যদি কুরআনকে ধরে রাখে তাহলে তাদের জীবনের সকল সমস্যা দূর হবে।
সর্বশেষে বলেন, হাফেজ এবং ক্বারি হিসেবে আপনার কি ইচ্ছা রয়েছে?
আমি আশাকরি চেষ্টা এবং অনুশীলনীর মাধ্যমে একদিন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ক্বারি হব।
iqna




প্রকাশিত: 1
পর্যালোচনা করা হচ্ছে: 0
প্রকাশযোগ্য নয়: 0
carilwqn
0
0
20
captcha