IQNA

সর্বোচ্চ নেতা;

বুদ্ধিজীবী, চিন্তাবিদ এবং আলেমদের উচিত ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে তাদের সুস্পষ্ট অবস্থান ঘোষণা করা

14:55 - June 26, 2017
সংবাদ: 2603331
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী আজ ঈদুল ফিতরের নামাজের খুতবায় মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। ইমাম খোমেনি ঈদগাহে অনুষ্ঠিত বিশাল জামায়াতে সর্বোচ্চ নেতা বলেন শত্রুরা যতই অসন্তুষ্ট হোক না কেন,মুসলিম বিশ্বের সকল বুদ্ধিজীবী, চিন্তাবিদ এবং আলেমদের উচিত ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে তাদের সুস্পষ্ট অবস্থান ঘোষণা করা।
আমাদের জনগণ মুসলিম বিশ্বের এই বিরাট আন্দোলনের মেরুদণ্ডে পরিণত হতে পারে
বার্তা সংস্থা ইকনা: ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরও বলেন মুসলিম বিশ্বের দেহে বহু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ইয়েমেন,বাহরাইনসহ অন্যান্য মুসলিম দেশের যেসব সংকট রয়েছে, সেসব সংকট ইসলামের দেহে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি করেছে।

সর্বোচ্চ নেতা আরও বলেন, মুসলিম বিশ্বের উচিত ইয়েমেনের জনগণের পাশে দাঁড়ানো। আগ্রাসী জালেমরা পবিত্র রমজান মাসেও ইয়েমেনের নিরীহ জনতার ওপর আগ্রাসন চালিয়েছে। ইয়েমেন, বাহরাইন এবং কাশ্মীরের জনগণের ওপর এ ধরনের ন্যাক্কারজনক জুলুমের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের উচিত সুস্পষ্টভাবে নিন্দা ও অসন্তোষ প্রকাশ করা।

বেশ কয়েক বছর ধরে মুসলিম বিশ্ব বিচিত্র সংকটের সম্মুখিন। ইসলামি জাগরণ যদিও ঐক্য ও সংহতিপূর্ণভাবেই শুরু হয়েছিল কিন্তু যথার্থ নেতৃত্ব আর গণজাগরণের প্রতি সমর্থনের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট ও ঐক্যবদ্ধ অবস্থান না থাকার কারণে ওই জাগরণ লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে নি।

মুসলিম দেশ এবং মুসলমানদের মাঝে অনৈক্যের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শত্রুরা মুসলিম দেশগুলোকে সংকটে মুখে ঠেলে দিয়েছে। বাহরাইনের জনগণ ২০১১ সাল থেকে শান্তিপূর্ণ বিপ্লব শুরু করেছে। এ কারণে বাহরাইনের জনগণ এবং আলেম সমাজের ওপরও আলেখলিফা সরকার নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাহরাইন পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্ব বিশেষ করে আলেম সমাজের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান না থাকার কারণে আলেখলিফা সরকার মার্কিন সবুজ সংকেতে জনগণসহ আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

ইয়েমেন পরিস্থিতি বাহরাইনের চেয়েও খারাপ। সেদেশের নিরীহ জনগণ এই রমজান মাসেও সৌদি আগ্রাসনের শিকার হয়েছে। দেশটির ওপর জল এবং আকাশ অবরোধের পাশাপাশি দমন পীড়নের মাত্রা এতো বিপর্যয়কর পর্যায়ে গেছে যে মানবতা বিরোধী অপরাধসহ যুদ্ধাপরাধের প্রতীক হয়ে উঠেছে ইয়েমেন। মানবতা বিষয়ক জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ওসিএইচএ বহু অনুরোধ সত্ত্বেও রমজান মাসে ইয়েমেনের জনগণের ওপর সৌদি বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। সংস্থাটি ওই বিমান হামলার ঘটনাকে আন্তর্জাতিক সকল রীতিনীতির লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে।

ইয়েমেনের স্বাস্থ্য, খাবার, চিকিৎসা পরিস্থিতি যে-কোনো স্বাধীনচেতা মানুষের বিবেককে নাড়া দিতে বাধ্য। সেখানে কলেরায় মারা যাচ্ছে লোকজন। হাসপাতালগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসাহীনতার এই পরিস্থিতি মুসলিম বিশ্বের গায়ে গুরুতর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। ইউনিসেফের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইয়েমেনে প্রতিদিন নতুন করে পাঁচ হাজার মানুষ কলেরায় আক্রান্ত হচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেখানে কলেরা রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এরকম পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের কাছে প্রত্যাশা হলো মার্কিন-সৌদি জালেমদের ব্যাপারে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট করা এবং ওই আগ্রাসনের ব্যাপারে অসেন্তাষ ও নিন্দা জানানো।
iqna
captcha