IQNA

ইউরোপীয় সরকারী অফিসে হিজাব নিষিদ্ধ

0:00 - December 02, 2023
সংবাদ: 3474738
ইউরোপ (ইকনা): ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের কর্মচারীদের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিফলন করে এমন পোশাক পরতে নিষেধ করতে পারে।

পশ্চিমা বিশ্বে ইসলাম-বিদ্বেষ আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস হিজাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে নতুন একটি আইন পাস করেছে।
 
বলা হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো নিজ নিজ দেশের কর্মক্ষেত্রে নারীদের ধর্মবিশ্বাসের পরিচায়ক পোশাক পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে। সম্প্রতি এক মহিলা দাবি করেছিলেন তার নিয়োগকর্তা তাকে কর্মক্ষেত্রে হিজাব পরতে পারবে না বলে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটা তার ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ।
 
বেলজিয়ামের ওই মহিলা এরকম দাবি করার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোর্ট অফ জাস্টিস হিজাব নিষিদ্ধ করার স্বাধীনতা দিয়ে ওই আইন পাস করলো। ইউরোপীয় দেশগুলোতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এমনিতেই ইসলাম-বিদ্বেষ ব্যাপকভাবে বড়ে গেছে।  ফ্রান্সের মতো ইউরোপীয় অনেক দেশে মুসলমানদের ওপর বিশেষ করে মুসলিম নারীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেছে। এমনকি তাদের ধর্মীয় পবিত্রতার অবমাননার ঘটনাও বেড়েছে। তবে গত কয়েকমাসে ইসলাম-অবমাননার মাত্রা সীমা ছেড়ে গেছে। কুরআন পোড়ানোর অনুমতি কিংবা স্কুলে মুসলিম মেয়েদের স্কার্ফ পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আইন প্রণয়ন করা তার উদাহরণ। ধর্মীয় স্বাধীনতার বুলি আওড়ানো এইসব দেশই আবার অন্যান্য দেশে স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
 
হিজাব এবং স্কার্ফ মুসলিম নারীদের ধর্মীয় অনুশাসন। এসব পরা পশ্চিমাদের ধর্মনিরপেক্ষ নীতির খেলাপ। জার্মানিও সরকারি কর্মচারীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করেছে। হাঙ্গেরিতেও মুসলিম নারীরা তিরস্কারের শিকার। এ কারণেই জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সম্প্রতি বলেছেন: মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও লিঙ্গ বৈষম্যের বিষয়টি অনস্বীকার্য।
 
এখন আবার ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস ইসলাম বিরোধীতা এবং মুসলমানদের ওপর চাপ বৃদ্ধির আরেকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। যদিও মানবাধিকার সম্পর্কিত ইউরোপীয় কনভেনশনের ৯ নং ধারায় বলা হয়েছে: প্রত্যেকের চিন্তা, বিবেক এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। কোর্ট অফ জাস্টিস কার্যত ইউরোপীয় দেশগুলোকে অনুমতি দিয়েছে মুসলিম নারীদের হিজাব পরার স্বাধীনতা না দিতে এবং কর্মক্ষেত্রে তাদের অবস্থানকে বিপন্ন করতে।
 
দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর), দেশের বৃহত্তম নাগরিক অধিকার এবং মুসলিম অ্যাডভোকেসি সংস্থা, ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রায়ের নিন্দা করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে যা নিয়োগকর্তাদের কর্মীদের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতীক, বিশেষ করে ইসলামিক হিজাব পরা থেকে নিষিদ্ধ করার অনুমতি দেয়। 
 
CAIR বিশ্বাস করে যে আদালতের সিদ্ধান্ত মার্কিন আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা আইনের (IRFA) ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের সংজ্ঞা পূরণ করে এবং তাই মার্কিন সরকারের কঠোর নিন্দার দাবি রাখে।
 
ইব্রাহীম হুপার, CAIR এর জাতীয় যোগাযোগ পরিচালক, একটি বিবৃতিতে বলেছেন: "ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস মুসলিম মহিলাদের কর্মক্ষেত্রে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করে ধর্মীয় স্বাধীনতার মৌলিক নীতিগুলি লঙ্ঘন করেছে। ইউরোপীয় দেশগুলিতে এই সিদ্ধান্ত এবং অতীতের রায়গুলি স্পষ্টতই মুসলমানদের লক্ষ্য করে এবং প্রকাশ্য স্থান থেকে ইসলামের প্রকাশ অপসারণ করতে চায়।
captcha